Let the child grow up in care | যত্নে বেড়ে উঠুক শিশু

সঠিক যত্নে বেড়ে উঠুক শিশু

অনেক সময়ই শিশুরা বেড়ে ওঠে একা একা।  যৌথ পরিবার নেই বলেই চলে. সুতরাং আগেকার দিনের মতো দাদু, ঠাকুমা, কাকা, কাকিমা, পিসি প্রভৃতি মানুষের সাহচর্য থেকে শিশু বঞ্চিত। একারণেই মা -বাবার অনেক বেশি যত্নশীল হওয়া জরুরি।  অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মা-বাবা উভয়ের কাজের ব্যাস্ততায় অথবা পারিপার্শিক চাপে শিশুকে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া যায় না।  এর ফলে শিশুর মানসিক বিকাশের ওপর একটা গভীর প্রভাব পড়ে । 

 

 

    প্রত্যেক মা-বাবাই চান তাদের সন্তান হবে সবার চেয়ে সেরা। অথচ সঠিকভাবে বলতে গেলে এমন কোনো প্রক্রিয়া  নেই যেটা অনুসরণ করলেই শিশুরা হয়ে উঠবে এক একটা জিনিয়াস। তবে কিছু নিয়ম আছে যেগুলি মেনে চললে শিশু মানসিক ভাবে দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠতে পারে। 

 

  • ১) শিশুকে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে গিয়ে তাকে সব কিছু থেকে সরিয়ে রাখাটা ঠিক নয়।  মাঝে মাঝে তাকে সুযোগ দেওয়া দরকার তার নিজের মতো করে থাকবার। একটু অপরিচ্ছন্ন হলে বা ঘর এলোমেলো  করলে তাকে সবসময় বকা ঝকা করা থেকে বিরত থাকা দরকার। কারণ শিশুদের  স্বভাব অনুযায়ী সেটাই স্বাভাবিক, তাই সেটা মেনে নিয়ে বরং জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখাটা কতটা জরুরি সেটা বোঝানো দরকার। সময়ের সাথে সাথে শিশুরা নিজেরাই সেটা বুঝতে পারবে।
  • ২) শিশুকে ছোটো বেলা থেকেই বাড়ির ছোটোখাটো কাজ করতে দেওয়া উচিত এবং সেই কাজটা যাতে সে ভালোভাবে করতে পারে তার জন্য সাহস দেওয়া প্রয়োজন। শিশু যদি বুঝতে পারে মা-বাবা তাকে বিশ্বাস করে তবে তার মধ্যে একধরণের আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।  
  • ৩) শিশুর প্রতিটি ভালো কাজের চেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত, এর ফলে সে স্বাধীন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। কোনো কাজ যদি সে শখ করে করতে চায় যা হয়তো ওই বয়সে  না করে আর কিছুদিন পরে করলে ভালো হতো, তা তখন করতে দিয়ে প্রয়োজনে তার ভুল শুধরে দিয়ে বার বার চেষ্টা করতে সহযোগিতা করা দরকার। এর ফলে ওর মধ্যে লেগে থাকা একটা ব্যাপার তৈরি  হবে।  
  • ৪) অনেক মা-বাবা আছেন যারা সবসময় বলেন এটা করোনা, ওটা করোনা, এটা পারবে না, ওখানে যেও না, ওটাতে হাত দেবে না এটা কিন্তু ঠিক নয়।  আসলে শিশুদের মধ্যে অনেক বেশি এনার্জি  থাকার ফলে এগুলি সে করে।  তাই শিশু যদি গাছেও উঠতে চায় তাহলে তাকে আগেই বাধা না দিয়ে শুধু খেয়াল রাখা দরকার যাতে সে পড়ে না যায় বা সে আঘাত পায়। এর ফলে বড়ো হয়ে সে তার প্রতিটি কাজের প্রতি অনেক বেশি আত্মাবিস্বাসী হয়ে গড়ে উঠবে। 
  • ৫) শিশুদের সব কাজকেই সব সময় এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়।  শিশু যদি একটা কাগজ কেটে তাতে ইচ্ছে মতো রং করে অথবা সেটা দিয়ে কিছু একটা তৈরি করে এনে দেখায়, তবে সেটা যত ছোটোই হোক না কেন আনন্দের সাথে সেটা গ্রহণ করে তার প্রসংশা করা উচিত। ভুল হলে সঠিকটা দেখিয়ে দিয়ে শুধরে দেওয়াও  প্রয়োজন।
  • ৬) শিশুদের সব কাজে ও আচার আচরণ সমর্থন করলেও একটা সীমারেখা মেনে চলা প্রয়োজন। যেমন শিশুরা ঘরের দেয়ালে রং করলে, তাকে বোঝানো যেতেই পারে যে সে বড়ো হয়ে চিত্রশিল্পী হবে, কিন্তু ঘরের দেয়ালে না এঁকে কাগজে আঁকলে আরো ভালো হতো।  আর একটা বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন শিশু যদি মা-বাবা বা  বাড়ির বড়োদের কখনো অপমানসূচক কথা বলে সেক্ষেত্রে  কোনোমতেই সেই আচরণ সমর্থন না করে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করা প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও পুনরায়  করলে প্রয়োজনে তার বয়স অনুযায়ী তাকে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে সে জানতে পারবে যে কাজটা অন্যায় হয়েছে।  এভাবেই কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় সেটা সে অনুভব করতে পারবে ছোটো বয়স থেকেই নিজেকে সংশোধন করে নিতে পারবে।

Leave a Comment