মা-বাবা এবং পরিবারই শিশুর প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
শিশুর লালন পালন কেমন হবে বা হওয়া উচিত তার বেশিরভাগটাই নির্ভর করে তার মা-বাবা বা অভিভাবকের ওপর। অবশ্য এ ক্ষেত্রে সমাজ, দেশ বা রাষ্ট্রের ভূমিকা ও যথেষ্ট রয়েছে।
লালন পালনের ক্ষেত্রে কেউ হয়তো ৩ বছরের শিশুকে নিজের হাতে খাবার খেতে শেখাতে চাইবে, কেউ হয়তো ২ বছরে আবার কেউ হয়তো ৪ বছরে। পরিবারভেদে বিষয়টা একেক জায়গায় একেক রকম। সে ভাবে দেখতে গেলে সব বিষয়ই স্থান-কাল-পাত্র ভেদে বিভিন্ন রকম হয়, বিভিন্ন মতের হয় কিন্তু, প্রতিটি জিনিসেরই একটা সার্বজনীন মাপকাঠি থাকে, কমবেশি সেগুলো আমাদের মেনে চলা প্রয়োজন। শিশু লালন পালনের ক্ষেত্রে তেমনি সার্বজনীন কিছু কিছু নির্ধারিত বিষয় শিশুর জন্য ভালো বা মন্দ তা অভিভাবকের সঠিকভাবে ভাবা প্রয়োজন।
বর্তমানে পরিবার বলতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-বাবা আর সন্তান। যৌথ পরিবার প্রায় নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে শিশু অন্যান্য ভাই বোনদের থেকে বা পরিবারের অন্য সকলকে দেখে যে শিখবে তা হয়ে ওঠে না।
তাই মা-বাবাই যখন শিশুর প্রথম ও প্রধান শিক্ষক তখন প্যারেন্টিং (Parenting) সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকাটা বিশেষ প্রয়োজন।
পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে সন্তান আসার আগে মা-বাবার এই ধরনের প্যারেন্টিং কোর্স খুবই জনপ্রিয়। বর্তমানে আমাদের দেশে এই ধরনের কোর্স চালু হয়েছে।
এসব ক্ষেত্রে শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশ একেবারে শৈশব থেকে সাবালক হওয়া পর্যন্ত কেমন হওয়া উচিত তার একটা ধারণা দেওয়া হয়। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে বেশিরভাগ পরিবারে যেখানে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ সেখানে এসব কোর্স অলীক কল্পনা মাত্র। তাই মা-বাবাকে তার আশেপাশের ব্যক্তিদের সহায়তা ও সহযোগিতা এবং বিভিন্ন মাধ্যমের সাহায্যে অভিজ্ঞতা লাভ করার মধ্যে দিয়ে শিশুকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে দু -আড়াই বছর বয়স থেকে প্রাক- প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাসঙ্গিকতা ও যৌক্তিকতা এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার ও উন্নত পরিকাঠামোযুক্ত বেসরকারি শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। মা-বাবারা এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের শিশুর শিক্ষা ও বেড়ে ওঠা কেমন হওয়া উচিত তার একটা ধারণা পেতে পারে।